Advertisement
Google search engine

দাম্পত্য জীবনের সুখ শান্তি পুরোটাই নির্ভর করে যোগ্য ও উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের উপর। লাইফ পার্টনার নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়েরই কিছু পছন্দ অপছন্দ থাকেই। তাই একেবারেই চুপচাপ না থেকে বিয়ের পূর্বেই পাত্র-পাত্রী দুজনকেই তাদের মতামত ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখা উচিত। এতে করে বিয়ের পর যে কোনো ধরনের মতপার্থক্য, অসামঞ্জস্যতা ও ব্যবধান ঘুচানো সহজ হয়।

পাত্র-পাত্রী নির্বাচন আগে যতটা সহজ ছিল, এখনকার যুগে ততটাই কঠিন। বর্তমানে কেউ অর্থ-বিত্তকে প্রাধান্য দেয়, কেউ রূপ সৌন্দর্যকে, কেউবা আবার সামাজিক মর্যাদা বা উচ্চ শিক্ষাকে। সংসারে একসঙ্গে পথ চলতে গেলে মিল-অমিল, চাওয়া-পাওয়ার না মেলা হিসেব সবসময়ই থাকবে। তাই প্রকৃত লাইফ পার্টনার নির্বাচনে যে বিষয়গুলো খেয়াল করা উচিত তা জেনে নিন আজকের পোস্টে।

লাইফ পার্টনার সৎ হওয়া চাই

লাইফ পার্টনার হিসেবে পাশে দরকার একজন সৎ মানুষকে। যোগ্য জীবনসঙ্গী নির্বাচনে নারী ও পুরুষ উভয়েরই সততা ও বিশ্বস্ততার গুণটি রয়েছে কিনা দেখে নেয়া উচিত। সৎ বলতে আমরা বুঝি নির্লোভ ও স্বার্থহীন ভালো একজন মানুষকে। বিয়ের পাত্র-পাত্রী যেন একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত হয় এটাই হওয়া উচিত অভিভাবকদের প্রথম শর্ত। এতে করে বিয়ের পরে সংসারে আসবে সুখ ও সমৃদ্ধি। সততা ও বিশ্বস্ততা সম্পর্কে আশ্বস্ত হতে ছেলে বা মেয়ের আশেপাশের মানুষ ও কর্মক্ষেত্রে খবর নিতে পারেন।

আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব

বিয়ে যখন করছেন তখন পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন আপনার লাইফ পার্টনার আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কিনা। কারণ শুধুমাত্র সৌন্দর্য থাকলেও ব্যক্তিত্ব না থাকলে মানুষের সৌন্দর্য মলিন হয়ে যায়। তাছাড়া বিয়ের আগেই জীবনসঙ্গীর মানবিক মূল্যবোধ কতোটা ভালো তা পরীক্ষা করে নেবেন। যেমন ধরুন, নিজের চাইতে ছোট এবং ছোট পজিশনের মানুষের প্রতি তার আচরণ যদি খারাপ হয় তাহলে তার মানসিক এবং মানবিক মূল্যবোধ না থাকারই কথা।

শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু

অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ এ লাইফ পার্টনার নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রথমেই যে জিনিসটি দেখা হয় তা হলো ছেলে বা মেয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু। কারণ এখানে অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার একটা বিষয় থাকে। শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠিতে ছেলেদের অবশ্যই স্নাতক বা স্নাতকোত্তর হওয়া চাই। আর এখন প্রতিটা সচেতন ছেলেই চায় তাঁদের স্ত্রী অন্তত যেন পড়ালেখায় কমপক্ষে স্নাতক পাশ হয়। একজন শিক্ষিত মা সন্তানকে সুশিক্ষিত করতে পারেন, সেই সাথে যথেষ্ট পারদর্শিতার সাথে সংসার সামলাতে সক্ষম। আজকাল অভিভাবকদের পছন্দও একইরকমই।

ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

পাত্র পছন্দের ক্ষেত্রে আমরা পাত্রের ক্যারিয়ারটার দিকেই নজর দিয়ে থাকি বেশি। স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকদের পছন্দ ক্যারিয়ার সচেতন এবং সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত একজন ছেলেকে। চাকরির ক্ষেত্রে কন্যা এবং অভিভাবকদের পছন্দের তালিকায় আছে- সরকারি চাকুরীজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, ল-ইয়ার ইত্যাদি উঁচু পেশার মানুষ। মেয়েদের ক্ষেত্রে চাকরি করলে সংসার সামলানো যাবেনা এই ধারণা থেকে এখন অনেকেই বের হয়ে এসেছেন। মেয়েদের পেশার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

তবে বর্তমান সময়ে যে পরিস্থিতি তাতে চাকরির পাশাপাশি ক্যারিয়ারভিত্তিক চিন্তা ভাবনা, যোগ্যতা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাটাও দেখা উচিত। কারণ যে ছেলে বা মেয়েটি আজ সুপ্রতিষ্ঠিত নন নিজের যোগ্যতায় ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। আবার অনেকের মতে, বিবাহের ক্ষেত্রে পেশার বিষয়টা বিবেচ্য বিষয় নয় কেননা মানুষ যেকোনো মুহূর্তে নিম্ন মানের পেশা ছেড়ে, ভালো পেশা গ্রহণ করতে পারে।

লাইফ পার্টনার এর সাথে বয়সের ব্যবধান কেমন হবে?

সাধারণত কন্যার অভিভাবকরা চান ছেলে যেন তাদের কন্যার চাইতে অন্তত ৬-৭ বছরের বড় হয়। তাদের মতে এতে বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর বোঝাপড়াটা চমৎকার হয়। তবে এক্ষেত্রে আধুনিক মেয়েদের ভাবনা একটু অন্যরকম। তারা সমবয়সী বা মোটামুটি ২-৩ বছরের পার্থক্য আছে এমন ছেলেই পছন্দ করে বেশি। অবশ্য ছেলেরাও এখন এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না। তারা সমবয়সি কিংবা বয়সে বড় পাত্রীও বিয়ে করে থাকেন। তবে মোদ্দাকথা হলো, পাত্রের ও পাত্রীর মধ্যে ৩-৫ বছরের বয়সের ব্যবধান থাকা উচিত। মনোবিদদের মতে, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ম্যচিউরিটি একটু দেরিতে আসে।

একজন যুবতি মেয়েকে বাপ বা দাদার সমপর্যায়ের কারও সাথে বিবাহ দেয়া উচিত নয়। একটি সফল বিয়ে সেটাই যেখানে বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী পরস্পর অশেষ ভালোবাসা ও হৃদয়ের টান তৈরি হয়। বর্তমান সময়ে এই পরিবেশ তৈরির জন্য দুজনের বয়স কাছাকাছি হওয়া অনেক সহায়ক। তাই কাছাকাছি বয়সের পাত্র-পাত্রী ঠিক করা উচিত।

লাইফ পার্টনার এর শারীরিক সুস্থতা

বিয়ের আগে বাহ্যিক সৌন্দর্যের বাইরেও শারীরিক সুস্থতা নিয়ে সচেতন হওয়া উচিত দুপক্ষেরই। এক্ষেত্রে গায়ের রঙ, লম্বা-চওড়া ও ভালো স্বাস্থ্য এসব ব্যাপার গুরুত্ব পায় বেশি। অভিভাবকদের বিচারে ছেলেদের ক্ষেত্রে গায়ের রঙ শ্যামলা বা কালো হলেও কোনো সমস্যা নেই কিন্তু উচ্চতার দিকে ছেলেকে অবশ্যই লম্বা হতে হবে। খুব বেশি না হোক অন্তত মানানসই যেন লাগে এমন ছেলেই পছন্দ সবার।

এবার মেয়েদের কথায় আসা যাক। ছেলেরা সাধারণত মোটা মেয়ের তুলনায় ছিপছিপে বা পাতলা গড়নের মেয়েই বেশি পছন্দ করেন। আর উচ্চতার ক্ষেত্রে মিডিয়াম বা খাটো উচ্চতার হলে ভালো হয়। এছাড়া পাত্র-পাত্রী দুজনকেই শারীরিকভাবে সুস্থ হতে হবে তা নাহলে পরবর্তীতে এর প্রভাব সাংসারিক জীবনেও পড়তে পারে। এর মানে এই নয় যে সাধারণ বিষয় ধরে বসে থাকা উচিত। ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবে বিয়ের আগে ছেলে-মেয়ে উভয়েরই প্রয়োজনীয় কিছু মেডিকেল টেস্ট করানো উচিত।

ভদ্রতা ও বংশগত মর্যাদা

বিয়ের ক্ষেত্রে অনুচিত একটা কাজ হলো, পাত্র-পাত্রীর সমতা খোঁজার ক্ষেত্রে যা করা হয়ে থাকে। কেউ এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ির শিকার হয় আবার কেউ একেবারে শিথিল করে ফেলে। এখানে বাড়াবাড়ি হলো, পাত্র বা পাত্রী সম্ভ্রান্ত বংশের হলে, বাকি আর কোনো কিছু দেখার প্রয়োজন মনে করা হয় না। তখন পাত্রের যোগ্যতা, দ্বীনদারী, বয়স, শারীরিক ও আর্থিক সক্ষমতা ইত্যাদি কোনোটাকেই ভ্রুক্ষেপ করা হয় না। শুধুমাত্র বংশগত বিষয় দেখে অনেক সময় একজন অযোগ্য, শারীরিকভাবে অক্ষম বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত, বেকার, বৃদ্ধ পাত্রের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয়া হয়; পরিণামে ওই মেয়ে সারাজীবনের জন্য একটা জেলে বন্দি হয়ে যায়।

অভিভাবকের উচিত সভ্য ও ভদ্র পরিবার, যার সদস্যদের স্বভাব-চরিত্র ভালো সেখানে পাত্র-পাত্রী খোঁজ করা। একজন মানুষের কথাবার্তা, চালচলনেই তাঁর ভদ্রতা ও রুচিশীলতা প্রকাশ পায়। তাই ছেলে মেয়ে উভয়কেই হতে হবে এই ব্যাপারে যথেষ্ট মার্জিত। এটা করলে ভবিষ্যতে সন্তানরাও স্বভাব-চরিত্র ও উত্তম গুণাবলী সহজে শিখতে পারবে।

লাইফ পার্টনার এর মনের মিল কতখানি?

বিয়ের আগেই দেখে নিন আপনার লাইফ পার্টনার কি আপনার মতোই একই ধরনের চিন্তা করেন কিনা বা একই আদর্শে বিশ্বাসী কিনা। এখনকার বেশীরভাগ মেয়েরাই হয় স্বাধীনচেতা, তারা চায় পড়ালেখার পর ক্যারিয়ার গড়তে। মেয়েরা চায় তাঁর স্বামী বা পরিবার যেন এক্ষেত্রে বাো না দেয়। এসব ব্যাপারে ছেলেটিকে অবশ্যই হতে হবে খোলা মনের।

ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরকেও হতে হবে যথেষ্ট ভদ্র ও খোলামনের। স্বামী অফিসে কাজ করার সময় অনেক মানুষের সাথে মিশতে হতে পারে, অনেক সময় অফিসে বেশি টাইম দিতে হতে পারে এসব নিয়ে মেয়েটির কখনও অবুঝের মতো আচরণ করা উচিত নয়। একজন অনেক খোলামেলা মনের অধিকারী হয়ে সংকীর্ণ মনমানসিকতার মানুষের সঙ্গে সংসার টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয় না।

লাইফ পার্টনার এর রসবোধ থাকা চাই

খেয়াল রাখবেন লাইফ পার্টনার যেনো হাসিখুশি মেজাজের হয়। অনেকেই আছেন অনেক গম্ভীর মেজাজের হয়ে থাকেন কিন্তু তার মধ্যে কিছুটা হলেও রসবোধ থাকে। বেশিরভাগ দম্পতির মধ্যে যেই সমস্যাটা দেখা যায় তা হলো রসবোধের অভাব। মেয়েটি হয়তো খুব উচ্ছল প্রকৃতির অথচ ছেলেটি খুব শান্ত স্বভাবের বা গম্ভীর প্রকৃতির। আবার অনেক ক্ষেত্রে এমনও হতে পারে যে, ছেলেটি খুব ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে কিন্তু মেয়েটি একদম ঘরকোনা। তাই দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য রসবোধ থাকাটা খুব জরুরি।

শখ এবং পছন্দ

মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি তার শখের মাধ্যমেই প্রতিফলিত হয়। এবং সেই সাথে তার পছন্দ অপছন্দও প্রকাশ করেন তিনি মানুষ হিসেবে ঠিক কেমন। তাই একজন মানুষকে বুঝতে হলে সবচাইতে জরুরী তার শখ এবং পছন্দ সম্পর্কে জেনে নেয়া। পাশাপাশি যে কোন সম্পর্কেই মতামত বা আদর্শের মিল না থাকলে একসময় না একসময় বিরোধ হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যুক্তি-তর্ক বা কোন কোন ব্যাপারে মতানৈক্য হতেই পারে কিন্তু তাঁদের দুজনের মতামত আর আদর্শের অমিল হওয়া যাবেনা, তাই লাইফ পার্টনার নির্বাচনে অবশ্যই এই ব্যাপারটি প্রাধান্য পাবে বেশি।

দ্বীনদার পাত্র-পাত্রী খোঁজা

জীবনসঙ্গী নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পাত্র-পাত্রীর দ্বীনদারীতা। বিয়ের পর সুখী দাম্পত্য জীবন নির্ভর করে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, ভালোবাসা ও মনের মিলের ওপর। সম্পদ ও সৌন্দর্য একসময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে, কিন্তু দ্বীনদারী এমন এক গুণ যা কখনোই পুরানো হয় না। তাই দ্বীনদার পাত্র-পাত্রী দেখে বিয়ে করলে সম্পর্ক কখনো ভাঙ্গার সম্ভাবনা থাকে না। আর দ্বীনদারীর সঙ্গে সম্পদ ও সৌন্দর্য থাকলে তো সোনায় সোহাগা।

বিয়ের আগে কিছু বিষয়ে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিন

১. পাত্র-পাত্রী দেখার পরেই দ্রুত বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবেন না। একটি মানুষকে চিনতে সময় লাগে। ভেবে দেখুন যাকে আপনার লাইফ পার্টনার করতে চলেছেন সে কি আপনার বন্ধু‌ হতে পারে? সে কি আপনার সমস্যাগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল? আবার বিয়ের পরে জীবনে কিন্তু আমূল পরিবর্তন আসে। একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখুন, সেই সব পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আপনার আছে কি না? যদি না থাকে, তাহলে এখনই বিয়েতে এগোবেন না।

২. ভেবে দেখুন আপনার লাইফ পার্টনার আপনার জন্য কতটা কম্প্রোমাইস করতে প্রস্তুত? এই বিয়ে থেকে তার আশা ও ইচ্ছাগুলো সম্পর্কে জেনে নিন। বিয়ের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো নিজের জীবনের সাথে নিজের মতোই আরেকজনকে জড়িয়ে নেয়া যার সাথে জীবনের সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়া যায়। তাই নিজেদের সম্পর্কে জেনে নেয়া যে বিয়ের পর দুজনে একই সাথে থাকার ব্যাপারটি ঠিক কীভাবে চান এবং পরিবারের প্রতি দায় দায়িত্ব পালনের বিষয়টিও খোলামেলা আলোচনা করাই ভালো।

৩. নারী ও পুরুষ ভেদে লাইফ স্টাইলের ধরণ পুরোপুরি আলাদা হয়েই থাকে। আবার দুটি পরিবারের আলাদা ধরণের চিন্তাধারা জীবনযাপনের ভিন্নতায় মতের অনেক অমিলই থাকতে পারে। প্রথম দেখাতে সরাসরি কথা বলে এই ধরনের মিল অমিল গুলো জেনে নেয়া উচিত। এতে করে বিয়ের পাকা কথা বলা অনেক সহজ হবে।

শেষ কথা

অবশ্য আগের মতো একেবারে অজানা কারো সাথে বিয়ে এখন খুব কমই দেখা যায়- কারণ সময়টা এখন লাভ ম্যারেজ এর। যদিও বিয়ের আগে মাত্র দুএকবার কথা বলে পুরোজীবনের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া আসলেই অনেক কঠিন। তাই নিজের জন্য প্রকৃত লাইফ পার্টনার নির্বাচন করতে তার সম্পর্কে জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলো।

Google search engine

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here